এক শিশুশিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় পাইন্দং এলাকায় হজরত ইমাম-এ আজম আবু হানিফা গাউছিয়া সুন্নিয়া হেফজ ও এতিমখানার এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শিশুটির বাবা ফটিকছড়ি থানায় মামলা করার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মারধরের শিকার আট বছর বয়সী শিশুটির নাম রবিউল ইসলাম। তাকে দীর্ঘদিন ধরেই ওই শিক্ষক নির্যাতন করছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিশুটির বাবা আব্দুল হাকিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জানুয়ারির শুরুর দিকে আমার ছেলেকে পাইন্দং এলাকার হজরত ইমাম-এ আজম আবু হানিফা গাউছিয়া সুন্নিয়া হেফজ ও এতিমখানা মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে ভর্তি করাই। কিন্তু আমার ছেলেকে সোমবার মাদ্রাসায় দেখতে গিয়ে তার শারীরিক অবস্থা দেখে সন্দেহ হয়। পরে তার কাছে বিস্তারিত জানতে চাই।
‘এ সময় আমার ছেলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষত চিহ্নগুলো আমাকে দেখিয়ে হেফজ বিভাগের শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের মারধরের কথা জানায়। আমি আমার ছেলেকে মাদ্রসায় পড়াশোনার জন্য দিয়েছি, মারধরের জন্য নয়, আমি ওই শিক্ষকের বিচার চাই।’
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সায়েদুল আরেফিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলাবর দুপুরে শিশুটির অভিভাবক আমার কাছে লিখিত অভিযোগ জানালে আমি তাকে ফটিকছড়ি থানায় মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি। তা ছাড়া পুলিশের সহায়তায় ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা আব্দুল হাকিম মঙ্গলবার বিকেলে ওই শিক্ষককে আসামি করে মামলা করেছেন।
মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওসমান উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সোমবার আমরা পরিচালনা পর্ষদ শিশুটির বাবার সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করেছি। অভিযুক্ত শিক্ষককে আমরা ইতোমধ্যে শিশুটির চিকিৎসা খরচ বাবদ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। শিশুটির বাবাও সেটা মেনে নিয়েছেন।
কোনো আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মারকাযুল কোরআন ইসলামিক একাডেমির এক শিশুশিক্ষার্থীকে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে মাদ্রাসা শিক্ষক ইয়াহইয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়। গেল ১০ মার্চ ওই একাডেমি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
১১ মার্চ সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের গারাংগিয়া রংগিপাড়া হেফজখানা ও এতিমখানায় চার শিশুশিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর বাবা ১৩ মার্চ সাতকানিয়া থানায় মামলা করেন।
ওই দিন বিকেলে মাদ্রাসাটির শিক্ষক কামরুল হাসানকে আটক করে পুলিশ। পরদিন তাকে আদালতে পাঠানো হয়।